মাথায় হিজাব না থাকায় ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে (মর্যালিটি পুলিশ) গ্রেপ্তার, হেফাজতে থাকা অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ হওয়া এবং পরে হাসপাতালে মারা যাওয়া তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুতে ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইরান। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সেই বিক্ষোভের ৮ম দিন চলছে।
এদিকে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে কঠোর সতর্ক বার্তা দিয়েছে ইরানের সেনাবাহিনী। জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শত্রু দের মোকাবিলায় মাঠে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সেনাবাহিনী।
ইরানজুড়ে চলমান বিক্ষোভের মধ্যে শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এ হুঁশিয়ারি দিল দেশটির সেনাবাহিনী। পুলিশি হেফাজতে আমিনির মৃত্যুর তদন্ত অবশ্যই হবে বলে জানিয়েছে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি।
সেনাবাহিনী বলেছে, ‘এ ধরনের মরিয়া কর্মকাণ্ড হচ্ছে ইসলামী শাসনব্যবস্থাকে দুর্বল করতে শত্রু দের শয়তানি কৌশলের অংশ। অন্যায়ভাবে আক্রমণের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিতে শত্রু দের বিভিন্ন চক্রান্ত মোকাবিলা করব আমরা।’
এর পাশাপাশি শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সরকার সমর্থকরাও বিক্ষোভ করে। জুমার নামাজের পর সরকার সমর্থকদের এই বিক্ষোভকে দাঙ্গাকারীদের বিরুদ্ধে জনশক্তির আওয়াজ বলে অভিহিত করা হয়েছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের চালানো গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ জন। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়ে নিহত হয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাঁচ সদস্য।
অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন বলছে, সরকারিভাবে ১৭ জন নিহতের কথা বলা হচ্ছে।
ইরান সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী বিক্ষোভ সামাল দেয়ার সময় পুলিশের গুলিতে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সরকারের দেওয়া তথ্য ভুয়া বলে অভিযোগ উঠেছে।
মানবাধিকার সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অন্ততপক্ষে ইরানের ৮০টি শহরে মানবাধিকার এবং মৌলিক অধিকারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ।
ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, ইরানের রাজধানী তেহরানের জ্বলন্ত ছবি। সন্ধ্যা নামার পরই তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় জমায়েত হচ্ছে বিক্ষোভকারীরা।
সরকার বিরোধী স্লোগান দেয়ার পাশাপাশি কুশপুতুল এবং হিজাব পুড়িয়েও প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে বিক্ষোভকারীদের। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার পাশাপাশি পোড়ানো হয়েছে পুলিশের গাড়িও।
টিএইচ