রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

কৃষকদের আন্দোলন ঠেকাতে দিল্লিতে ১৪৪ ধারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কৃষকদের আন্দোলন ঠেকাতে দিল্লিতে ১৪৪ ধারা

ভারতের কৃষকদের আন্দোলন ঠেকাতে কঠোর তৎপর হয়ে উঠেছে ভারতীয় বিজেপি সরকার। দেশটির কৃষকরা ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের গ্যারান্টির জন্য একাধিক দাবি নিয়ে ফের আন্দোলনে নেমেছেন। তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দিল্লি চলো অভিযানের ডাক দিয়েছেন তারা।

কৃষকদের এই আন্দোলন ঠেকাতে সোমবার থেকে আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত ভারতের রাজধানীতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এছাড়া একাধিক জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও।

এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি দিল্লি চলো অভিযানের ডাক দিয়েছেন কৃষকরা। সংযুক্ত কিসান মোর্চা, কিসান মজদুর মোর্চাসহ ২০০টিরও বেশি কৃষক সংগঠনের ২০ হাজারের বেশি কৃষক এই আন্দোলনেরে ডাক দিয়েছে।

সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, কৃষক আন্দোলন ঘিরে অশান্তি বা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই দিল্লি ও হরিয়ানায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হরিয়ানার আম্বালা, কুরুক্ষেত্র, জিন্দ, হিসার, সিরসাসহ একাধিক জেলায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। এসএমএস পরিষেবাও বন্ধ ।

এছাড়া দিল্লির পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় অরোরার জারি করেন, কোনো ধরনের সমাবেশ, মিছিল এবং রাস্তা-প্যাসেজ অবরোধ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

কৃষকদের আটকাতে হরিয়ানার রাস্তায় বসানো হয়েছে সিমেন্টের ব্লক, পেরেক বসানো ব্যারিকেড ও কাঁটাতার। কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সিংঘু, গাজিপুর ও টিকরি সীমান্ত। দিল্লি-উত্তর প্রদেশের গাজিপুর সীমান্তে সিমেন্ট ঢালাই করে, পাঁচিল তুলে পাকাপাকিভাবে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ফসলের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) গ্যারান্টি দেওয়ার আইন, কৃষকদের জন্য পেনশন, শস্যবিমা এবং তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর বাতিলের দাবিতে ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘দিল্লি চলো’ ডাক দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষকেরা। একাধিক দাবি নিয়ে পথে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।

এর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী দিল্লি সীমানায় পেরেক বসানোর একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, “কৃষকের পথে পেরেক-কাঁটা বিছানো কি ‘অমৃতকাল’ নাকি ‘অন্যায়কাল’ ?”

এসকেএম নেতা জগজিৎ সিংহ ডালেওয়াল একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘সরকার ভয় পাচ্ছে কেন? বিশাল ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে। এটাই কি গণতন্ত্র? পরিস্থিতি খারাপ হলে এর দায়ভার হবে খট্টর সরকারের।’

দিল্লি এবং হরিয়ানায় প্রবেশের পথগুলোকে ভারত-পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) সঙ্গে তুলনা করেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান।

তিনি বলেন, ‘আমি কেন্দ্রকে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করার এবং তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। পাকিস্তানের সীমান্তের মতো দিল্লি যাওয়ার রাস্তাগুলোতে কাঁটাতার লাগানো রয়েছে।’

উল্লেখ্য,  গোটা ভারতে ২০২০ সালে কৃষক আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছিল। সেই আন্দোলনের জেরে শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। ‘বিতর্কিত’ কৃষি বিল প্রত্যাহার করা হয়েছিল। সে জন্যই অনেকে ফের আরেকবার দেশ উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

টিএইচ