যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপের মুখে সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে কোয়াসি কোয়ার্টেংকে। শুক্রবার তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার কিছু পর ব্রিটেনের নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান জেরেমি হান্ট।
কিন্তু তাতেও শান্ত হয়নি যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এবার দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দোলে লিজ ট্রাসকেও শিগগির ক্ষমতা ছাড়াতে হতে পারে। কারণ চলতি সপ্তাহেই কনজার্ভেটিভ দলের বিদ্রোহী সদস্যরা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা শুরু করবে।
এদিকে পার্লামেন্টারি পার্টির একটি বড় অংশ জয়ের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী রাতে কেন্দ্রীয় কনজার্ভেটিভদের ১০০ শক্তিশালী ওয়ান নেশন গ্রুপের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানা গেছে।
লিজ ট্রাস এমন এক সময় এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন যখন কনজার্ভেটিভ দলের বিদ্রোহীরা তাকে চলতি সপ্তাহেই সরিয়ে দেওয়া উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। যদিও ডাউনিং স্ট্রিট সতর্ক করে জানিয়েছে, এ ধরনের পদক্ষেপ সাধারণ নির্বাচনকে ত্বরান্বিত করবে।
বিদ্রোহী এমপিরা গ্রাহাম ব্র্যাডিকে প্রধানমন্ত্রী ট্রাসকে তার সময় শেষ বলার বা তার নেতৃত্বে অবিলম্বে আস্থা ভোটের অনুমতি দেওয়ার জন্য দলীয় নিয়ম পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে চাপ দিচ্ছেন। তাছাড়া তিনজন এমপি নিয়ম ভেঙে প্রকাশ্যে লিজ ট্রাসকে পদত্যাগ করতে বলেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ১০০ জনেরও বেশি পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) লিজ ট্রাসের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে চিঠি জমা দিতে প্রস্তুত। এই চিঠি তারা কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব প্রতিযোগিতার আয়োজনকারী কমিটির প্রধান গ্রাহাম ব্র্যাডির কাছে জমা দেবেন।
বরখাস্ত হওয়ার তিন সপ্তাহ আগে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে সংক্ষিপ্ত বাজেট ঘোষণা করেন কাওয়াসি কোয়ারতেং। ওই বাজেটে কর ছাড়ের ছড়াছড়ি থাকায় বেশ বিতর্কের জন্ম দেয়। পুঁজিবাজারেও অস্থিরতা শুরু হয়।
এক পর্যায়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে যুক্তরাজ্যের মুদ্রা পাউন্ড মূল্যমান হারিয়ে কয়েক দশকের সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে যায়। যদিও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের হস্তক্ষেপ, সংক্ষিপ্ত বাজেট বাতিলের গুঞ্জন ও অর্থমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এমন খবরে বাজারের কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে আসে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে সুনাককে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন কনজারভেটিভ এমপি রবার্ট হালফন। ট্রাসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ ধরে সরকার পুরো জাতির সঙ্গে গবেষণাগারে থাকা ইঁদুরের মতো আচরণ করেছে। বাজার নিয়ে নিরীক্ষা করেছে। এটা নিয়ে আমি ভীষণ উদ্বিগ্ন।’
তিনি আরো বলেন, ‘লিজ ট্রাসের এমন আচরণে সহকর্মীরা বেশ অসন্তুষ্ট। জনমত জরিপেও এর প্রভাব দেখা গেছে। তাই সহকর্মীরা নিজে থেকেই বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে উদ্যোগী হয়ে উঠেছেন। তারা কিছু একটা করতে চাইছেন।’ সূত্র: ডেইলি মেইল
টিএইচ