গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের হাতে বন্দীদের মুক্তির জন্য ইসরাইলের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং সেইসাথে স্থানীয়রা। বন্দীদের মুক্তির আগে তারা গাজায় স্থল হামলা স্থগিত রাখার অনুরোধ করছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের প্রতি।
হামাস গত শুক্রবার দুই বন্দীকে মুক্তি দেয়। তারা এখন ইসরাইলে আছে। হামাস দাবি করেছে, তারা আরো দুই বন্দীকে মুক্তি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ইসরাইল তাদেরকে গ্রহণ করেনি।
হামাসের মুখপাত্র আবু ওবায়দা বন্দী বিনিময় নিয়ে গ্রুপটির সাথে আলোচনাকারী কাতারকে জানিয়েছে, মানবিক কারণে শুক্রবার নরিথ ইউয়শাক ও ইয়কেফেড লিফশটজ নামের আরো দুই বন্দীকে মুক্তি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ইসরাইল তাদেরকে গ্রহণ করেনি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার হামাস দুই আমেরিকান জুডিথ তাই রানান এবং তার মেয়ে নাতালি রানানকে মুক্তি দেয়। তাদের সাথেই তারা আরো দুজনকে মুক্তি দিতে চেয়েছিল। তবে ইসরাইল এটিকে হামাসের `প্রপাগান্ডা` হিসেবে অভিহিত করেছে।
শুক্রবার দুই বন্দী মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই পর্দার অন্তরাল থেকে কূটনীতিকরা ইসরাইলের ওপর চাপ দিয়ে আসছে। বেশ কয়েকটি পাশ্চাত্য দেশ তা করছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ওই দেশগুলো বলছে যে নিজেকে রক্ষার অধিকার অবশ্যই ইসরাইলের আছে। তবে ইসরাইলের উচিত তা এখন বন্ধ রেখে বন্দীদের মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করা।
এদিকে ইসরাইলি সামরিক নেতাদের কাছ থেকে শনিবার পুরো দিনজুড়ে শোনা যায় যে গাজায় তারা হামলা আরো জোরদার করতে যাচ্ছে। হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ে যাওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে তারা এ কাজ করবে।
শনিবার শত শত লোক তেল আবিবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে সমবেত হয়। তাদের মধ্যে হামাসের হাতে বন্দীদের স্বজনরাও ছিল। তারা বন্দীদের মুক্তির ব্যাপারে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আরো ২ বন্দীকে মুক্তি দিতে চেয়েছিল হামাস, ইসরাইল নেয়নি!
তারা বলছেন, বন্দীদের মুক্তির জন্য সরকার আরো কিছু করুক, তাই তারা চায়। এমনকি বন্দীদের মুক্তি পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির দাবিও জানান তারা। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা এবং বন্দীদের মুক্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়ে ২১০ জনকে বন্দী করে। তাদেরকে গাজার ভেতরে বিভিন্ন স্থানে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে নারী, শিশু, প্রবীণ ব্যক্তির পাশাপাশি ইসরাইলি সামরিক বাহিনীকে সক্রিয় সদস্যরাও রয়েছে।
হামাসের `অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড` নামের অভিযানে ইসরাইলে ১৪ শ`র বেশি লোক নিহত হয়েছে। এদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। এছাড়া আহত হয়েছে সাড়ে তিন হাজারের বেশি।
এরপর থেকে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তাদের হামলায় গাজায় প্রায় ৪,৪০০ লোক নিহত এবং ১৩,৫০০ লোক আহত হয়েছে। তারা গাজায় কঠোর অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। ইসরাইল হামাসকে পুরোপুরি ধ্বংস করার সংকল্প ব্যক্ত করেছে। সূত্র : আল জাজিরা, জেরুসালেম পোস্ট এবং অন্যান্য
টিএইচ