রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

‘আইনজীবীকে জানিয়েই ড. ইউনুস বিদেশে যাবেন’

আদালত প্রতিবেদক

‘আইনজীবীকে জানিয়েই ড. ইউনুস বিদেশে যাবেন’

নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুসের  আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, তিনি বিদেশে গেলে আইনজীবীর মাধ্যমে জানিয়ে যাবেন। কারণ,কোর্টকে জানিয়ে বিদেশ যাত্রা এটা কারও প্রতি কোনো কিছু না,বরং  আদালতের প্রতি সম্মান । 

আবদুল্লাহ আল মামুন  শ্রম কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষের আইনজীবী সম্পর্কে বলেন, লাফ দিয়ে যদি উনি হাইকোর্টে চলে আসেন,অ্যাপিল ডিভিশনে চলে আসেন,তাহলে লেবার ট্রাইব্যুনালের হাতে তো হাতকড়া পরিয়ে দেওয়া হয়। বিচার ব্যবস্থা তো আর থাকেনা। বিচার ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়,যেটা আমি আদালতে বলেছি। এবং কোর্ট এটা ভালো করে উপলব্ধি করেছেন। এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে তারা আমাদের আপিল যে এডমিট হয়েছে তা মেনে নিয়েছে।

আর এটা মেনে নিলে স্বাভাবিকভাবেই স্থগিত হয়ে যায়। এছাড়াও বেইলও মেনে নিয়েছে ,জরিমানা ও মেনে নিয়েছে। কোনো প্রতিবাদ করেন নাই । গতকাল সোমবার শুনানি পরবর্তীতে ড. ইউনুসের এ আইনজীবী বলেন,আজকে সিভিল রিভিশন যে মামলাটা করলেন,এ সম্পর্কে আমি আদালতের কাছে বলছি এ কোর্টে আসার জন্য তার জন্মই হয়নাই। এটা আইনের চোখে ”জন্ম না নেওয়া শিশু”। কিন্তু কিভাবে যেনো লাফিয়ে কোর্টের তিন তলায় উঠে গেছে। তাকে বাঁধা দেওয়া হয়নাই। 

কারণ গত ২৮ তারিখে সাজার বিরুদ্ধে আমরা আপিল করেছি আপিল আদালতে।আপিল আদালতের এই আদেশ সম্পর্কে যদি এগরিভড হয়ে থাকে তাহলে আমরা হয়েছি। কারণ সে তো কোনো দরখাস্তই করে নাই। সুতরাং এখানে যে তার আবেদনটা তা সম্পূর্ণ আইন সম্পর্কে ভুল ধারণা।

আইনের ভুল ব্যাখ্যা  ,এবং আইন সম্পর্কে ধারণা  না থাকার কারণে এটা করেছে এবং কোর্ট ও এ সম্পর্কে  আমাদের সাথে একমত হয়েছে। কোর্ট শুধু বলছে যতক্ষণ পর্যন্ত  আপিলে এ মামলা থেকে মুক্তি না পাবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আদেশটা বহাল থাকবে আর সাজাটা আপিল করলে স্থগিত হয়ে যায়। তখন খুরশীদ আলম বললেন ঠিক আছে তাহলে আমরা একটা রুল দেই।

কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম  বলেন,ড. ইউনুস এবং অন্য তিনজনের বিরুদ্ধে যে ৬ মাস সাজা এবং ৩০ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছিল।এবং পরবর্তীতে তার জামিন হয়েছিল। আমরা তার সেই জামিনে বিক্ষুব্ধ হইনি। নথি তলব করেছে তাতে বিক্ষুব্ধ হইনি, আমরা বিক্ষুব্ধ হয়েছি শ্রম আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় যে  উনি স্থগিত করে দিয়েছিল তার বিরুদ্ধে। আইন অনুযায়ী সেটা তিনি পারেন না।আইন শ্রম আপিল ট্র্যাইবুনালকে এই অনুমতি দেয়নি। আমরা একটি ফৌজদারি রিভিশন দায়ের করছি,এবং দুটো নজির আজকে কোর্টেও সামনে পেশ করেছি।এবং বলেছি যে সাজা কখনো বন্ধ করা যায়না। আদালতও এটা শুনেছেন,এবং তার সাজার স্থগিতাদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন।তার মানে ড.ইউনুস সহ বাকি তিন জন এখন আইনের দৃষ্টিতে সাজাপ্রাপ্ত দণ্ডিত আসামি।

উল্লেখ্য ,আদালতকে জানিয়ে বিদেশ যেতে হবে ড. ইউনূসকে ,শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৬ মাসের সাজার বিরুদ্ধে আপিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিদেশ যেতে হলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালকে জানিয়ে যেতে হবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ড. ইউনূসের ৬ মাসের সাজা স্থগিতের আসে স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী কোনো মামলা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করলে এ কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাজা স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থগিত থাকে। এটার জন্য আলাদা আদেশের প্রয়োজন নেই । গতকাল সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে গতকাল রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) শ্রম আইন লঙ্ঘনের এ মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনের সাজার রায় স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। সেই আবেদনে আদালতের অনুমতি ছাড়া ড. ইউনূস যেন বিদেশ যেতে না পারেন সে বিষয়েও আর্জি জানানো হয়।আবেদন করা হয়েছে। শ্রম আইন লঙ্ঘনের ওই মামলায় গত ১ জানুয়ারি ড. ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন ঢাকার শ্রম আদালত-৩ এর বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা। রায় ঘোষণার পর আপিল করার শর্তে তাদের এক মাসের জামিন দেন একই আদালত। ড. ইউনূস ছাড়া অন্য তিনজন হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

টিএইচ