শ্রমিক ঠকানোর মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য শ্রম আদালতে উপস্থিত হয়েছেন গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান এবং নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে আদালত চত্বরে এসে পৌঁছান তিনি। ড. ইউনূসের সঙ্গে রয়েছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এর আগে তৃতীয় দিনের মতো গত ১৬ নভেম্বর আদালতে যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিচারের শেষ পর্যায়ে সেদিন শ্রমিকদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের আইনজীবীরা।
সেদিন শুনানি চলে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত। পরে বাদীপক্ষের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, অধ্যাপক ইউনূসসহ আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিতে সাক্ষ্যপ্রমাণ তুলে ধরেছেন তারা।
শুনানি শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ড. ইউনূসও। তিনি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। ইউনূস বলেন, ‘সাক্ষ্যপ্রমাণ সব দেয়া হয়েছে। এখন আদালত বিচার করে রায় দেবে। আমি যেন সুবিচার পাই, সেটাই আমার চাওয়া।’
ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘তিনটি অভিযোগে এই মামলা করা হয়েছে। এই তিনটি অভিযোগের সঙ্গে ড. ইউনূসের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। জেরায় বাদী নিজেও স্বীকার করেছেন। অন্যরাও বলেছেন যে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। যদি কারও সংশ্লিষ্টতা না থাকে, তবে তাকে কেন আসামি করা হলো? তার একটিই কারণ, সেটি হচ্ছে ড. ইউনূসের সম্মানহানি করা! এটি একটি চক্রান্ত ছাড়া আর কিছু না।’
‘এই মামলা শেষ হওয়ার পথে। আর আজ তারা কতগুলো নতুন কাগজ দিয়েছেন। এগুলো এভিডেন্সে নেই। তারা যখন দেখছেন, মামলায় হেরে যাচ্ছেন, তখন নতুন করে এসব কাগজ উপস্থান করা হলো, যেগুলোতে কোনো সাক্ষী নেই। আমাদের এভিডেন্সও দেয়া হয়নি’, যোগ করেন তিনি।
ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আজকে তর্ক শুনে যেটা মনে হয়েছে, তাতে আইন অনুযায়ী বিচার হলে এই মামলায় শাস্তি দেয়ার মতো পৃথিবীতে কোনো শক্তি নেই। বরং এই যারা অপমান করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার।’
শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে শ্রমিকদের লভ্যাংশের টাকা জমা না দেয়া, চাকরি স্থায়ী না করা, বার্ষিক ছুটি নগদায়ন না করার অভিযোগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের নামে এ মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান। সেখানে তারা শ্রম আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে পারেন। এর মধ্যে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি।
টিএইচ