২০০৫ সালে চারদলীয় জোট সরকার ৩২৭ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২০০৭ সালের মে মাসে তাদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। পরীক্ষায় এই ৮৫ জন কর্মকর্তা অকৃতকার্য হওয়ায় তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
পরে সংক্ষুব্ধরা প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে গেলে ২০১০ সালে তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল। পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে দীর্ঘদিন পরে এ বিষয়ে প্রর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। রায়ে ওই কর্মকর্তার নিয়োগ পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির সইয়ের পর ২৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ এ রায় বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার নিয়োগ পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিল করেন আপিল বিভাগ। সেদিন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী। অন্যদিকে চাকরিচ্যুত নির্বাচন কর্মকর্তাদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, প্রবীর নিয়োগী, সালাহ উদ্দিন দোলন ও কামরুল হক সিদ্দিকী।
জানা যায়, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়।
চারদলীয় জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে অনুত্তীর্ণ ৮৫ জনকে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। পরে এর বিরুদ্ধে আপিল করেন তারা।
এই আপিল মঞ্জুর করে ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল। রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে পৃথক আপিল করে সরকারপক্ষ। সেই আপিল মঞ্জুর করে উপরোক্ত রায় দিলেন আপিল বিভাগ।
টিএইচ