অমর একুশে বইমেলা শুরুর প্রথম দুইদিন তেমন জমজমাট ছিলো না। তবে শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিনে সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলা একাডেমি চত্বর ও এর সামনের স্টলগুলোতে ছিল বইপ্রেমীদের ভিড়।
আজ (শুক্রবার) মেলা শুরু হয়েছে বেলা ১১টায়। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। তাই সকাল থেকে শুরু হয়েছে বইপ্রেমীদের আনাগোনা। স্টলে স্টলে ঘুরে বইয়ের মলাট উল্টেপাল্টে দেখে বই কিনছেন তারা।
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, বড়দের পাশাপাশি এদিন মেলায় এসেছে ছোট্ট সোনামণিরা। শিশু প্রহরে সিসিমপুরের হালুম, ইকরি, শিকু ও টুকটুকিদের সঙ্গে সময় কাটাতে পরিবারের সঙ্গে মেলায় এসেছে তারা।
"মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ৯৬টি"। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, অন্য প্রকাশ থেকে প্রকাশিত আনিসুল হকের আত্মউন্নয়নমূলক `প্রেরণার গল্প` বদিউদ্দিন নাজিরের লেখালেখির কলাকৌশলমূলক `বই প্রকাশে লেখকের প্রস্ততি` ইকবাল খন্দকারের `রহস্যময় সাপের কেল্লা` আব্দুল গাফফার চৌধুরীর `বাংলাদেশের জাতীয় মুক্তির পথ` এ ইউ এস এম সাইফুল্লা ফুলোর বঙ্গবন্ধুর ডাকে শূন্য থেকে স্বাধীনতা` প্রভৃতি।
ছুটির দিনে বইপ্রেমীদের উপস্থিতি এবং বই বিক্রির অবস্থা জানতে চাইলে সময় প্রকাশনীর সেলসম্যান রমজান আলী এবং অন্বেষা প্রকাশনীর রাকিব বলেন, তৃতীয় দিনে মেলাটা আসলে আগের সেই রূপে ফিরেছে মনে হচ্ছে। এবং আজকে প্রথম দুই দিনের তুলনায় বই বিক্রি ও বেশি হচ্ছে। আজকে শুক্রবার হওয়ায় এই ভীড়টা দেখা যাচ্ছে।
বিকেল ৪ টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ: আবুল মাল আবদুল মুহিত শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুতুব আজাদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, জালাল ফিরোজ এবং এম আবদুল আলীম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নূহ-উল আলম লেনিন।
প্রাবন্ধিক বলেন, আবুল মাল আবদুল মুহিত লেখক-পাঠক-ভাবুক-বিশ্লেষক-গবেষক-অর্থনীতিদ ও রাজনীতিক এক বর্ণিল ও বিচিত্র প্রতিভা। ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ,ভাষা-আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ ছিল তার আজীবন চলার পাথেয়। তার বিপুল গ্রন্থরাজি, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত নানা প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও গবেষণাপত্র দেশব্যাপী পাঠককুলের সাথে তাকে এক মেলবন্ধনে আবদ্ধ করে। সবকিছু ছাপিয়ে তিনি একজন সংস্কৃতিবান ও রুচিবান আত্মনিবেদিত দেশকর্মী। নানা বিবেচনায় মনস্বী আবুল মাল
আবদুল মুহিতের নির্মোহ মূল্যায়ন প্রয়োজন।
সভাপতির বক্তব্যে নূহ-উল আলম লেনিন বলেন, আবুল মাল আবদুল মুহিত একজন বিরলপ্রজ বাঙালি। মেধা-মননে, শিক্ষাদীক্ষায় আলোকিত আবদুল মুহিত একজন সার্থক অর্থমন্ত্রীই ছিলেন না; মানুষ হিসেবেও তিনি ছিলেন সত্যনিষ্ঠ, সত্যবাদী এবং দেশপ্রেমিক। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী তার জীবন ও কর্ম তরুণ প্রজন্মকে সামনে এগিয়ে যাবার প্রেরণা জোগাবে।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন আহমদ বশীর, সুজন বড়ুয়া, রাজীব সরকার এবং হারিসুল হক।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি তারিক সুজাত, কুমার চক্রবর্তী এবং সুপ্রিয়া কুন্ডু। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রেজিনা ওয়ালী, ঝর্ণা সরকার এবং আহসানউল্লাহ তমাল। নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্যসংগঠন ‘বুলবুল একাডেমী
অব ফাইন আর্টস (বাফা)’-এর নৃত্যশিল্পীবৃন্দ।
সংগীত পরিবেশন করেন সাজেদ আকবর, সালমা আকবর, শাহনাজ নাসরিন ইলা, মো. হারুন অর রশীদ এবং মুহা. আব্দুর রশীদ।
আগামীকাল বই মেলা সকাল ১১ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত মেলায় শিশুপ্রহর চলবে। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ : ড. আকবর আলি খান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আমিনুল ইসলাম ভুইয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ফারুক মঈনউদ্দীন, মো. মোফাকখারুল ইকবাল এবং কামরুল হাসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মোহাম্মদ সাদিক।
টিএইচ