যশোরের চৌগাছার ভারত সীমান্তের গা ঘেষা গ্রাম গয়ড়া। সন্ধ্যা নামলেই গ্রামের মাঠ এমনকি বাড়ির উঠান পর্যন্ত ভারতের তার কাটা সংলগ্ন সার্চ লাইটের আলোয় আলোকিত হয়ে যায়। সেই গ্রামের মাত্র দুই কিলোমিটার সড়কের চরম বেহালদশায় সকলকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
প্রায় দুই দশক আগে সড়কটি ইটের সলিং করা হয়। এরপর আর মেরামত করা হয়নি ফলে ইট উঠে সৃষ্টি হয়েছে গর্তের যানবাহন তো দুরের কথা পায়ে হেটে চলাও কষ্ট জানান গ্রামবাসী।
উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের একটি গ্রাম গয়ড়া। ভারতের উত্তর চাব্বিশ পরগনা জেলার বয়রা বাজারের পাশ দিয়ে গড়ে উঠা গ্রামে প্রায় দুই হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ সরাসরি কৃষি কাজের সাথে জড়িত।
মাশিলা বাজার টু তিলেকপুর বাজার মেইন সড়কের মাঝখান হতে একটি ইটের সলিং রাস্তা চলে গেছে গয়ড়া গ্রামের মাঝখান দিয়ে। মেইন সড়কের পাশে জৈনক নুরের বাড়ি হতে শুকুর আলীর বাড়ি পর্যন্ত মাত্র দুই কিলোমিটার সড়ক প্রায় দুই দশক আগে ইটের সলিং করা হয়।
বছরের পর বছর পার হয়েছে সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে সড়কের বেশির ভাগ ইট উঠে চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। চরম কষ্ট উপেক্ষা করে প্রতিদিন কৃষক, দিনমজুর, শিক্ষার্থীসহ সব বয়সের মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে। সড়কটি পাকাকরণের জন্য গ্রামবাসী বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির কাছ ছুটেছেন বহুবার কিন্তু ফল পায়নি এমনটিই জানান গ্রামের সাধারণ মানুষ।
গয়ড়া গ্রামের বয়োবৃদ্ধ জলিল উদ্দিন, ফজলুর রহমান, কৃষক আয়ুব হোসেন বলেন, নির্বাচন এলে প্রার্থীরা নানাভাবে প্রলোভন দেখান। ভোট শেষ তো তাদের দেখা শেষ। এভাবেই কেটে গেছে দিন, মাস এমনকি বছরের পর বছর। কোন নেতা আমাদের এই কষ্টকে বুঝতে চেষ্টা করেনি, ফলে গ্রামের মানুষের কষ্ট সেই আগের মতই রয়ে গেছে।
স্কুলছাত্র কবির হোসেন, ইউছুপ আলী বলেন, সলিং সড়কের এই বেহালদশা বছরের পর বছর ধরে দেখে আসছি কিন্তু নতুনভাবে সড়কটি তৈরি হওয়ার কোন সম্ভবনা দেখছি না। অনেক কষ্টে আমাদের সড়কটি পাড়ি দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়।
স্থানীয়রা জানান, গয়ড়া গ্রাম সীমান্ত ঘেষা হওয়ায় চোরাকারবারির আনাগোনা এখানে বরাবরই বেশি থাকে। সড়কের এই বেহালদশার কারণে সীমান্তে বিজিবি সদস্যদের চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে। তাই সড়কটি দ্রুত পাকা করার দাবি জানান তারা।
৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন কবির জানান, সলিং সড়কটি পাকাকরণের জন্য আমি পরিষদে প্রস্তাব রেখেছি, আশা করছি পরিষদ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
স্বরুপদাহ ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল কদর বলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে গয়ড়া গ্রামের ওই সড়কটি পাকাকরণ করা হবে এই কথা গ্রামবাসীকে বলেছিলাম। এখন সেই ওয়াদা পুরনের সময় এসেছে। আগামী অর্থবছরে সড়কটি পাকাকরণ হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা প্রকৌশলী রিয়াসাত ইমতিয়াজ বলেন, সড়কের এই বেহালদশা জানা ছিলো না, খোঁজ নিয়ে দ্রুতই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
টিএইচ