পাঁচ বছর ধরে পরিত্যক্ত থাকা সিলেটের বিয়ানীবাজার গ্যাস ক্ষেত্রের ১ নম্বর কূপ সচল হয়েছে। বিশ্বজুড়ে যখন চরম জ্বালানি সংকট ঠিক তখন আশার আলো জ্বালিয়েছে সিলেট গ্যাস ফিল্ড।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) থেকে এই গ্যাস ফিল্ডের পরিত্যক্ত ১ নম্বর কূপ থেকে প্রায় ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাস প্রতিদিন যোগ হবে জাতীয় গ্রিডে। ২০২৫ সালের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ১৬৪ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৬ কোটি ৪০ লাখ ঘনফুটে উন্নীত করার প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
এমন সুসংবাদ দিয়েছেন সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান। তিনি জানান, একই ফিল্ডের ২ নম্বর কূপের ৭ লাখ ৭০ হাজার ঘনফুট গ্যাস প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, রোববার রাত ১২টার পর থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা যাবে। গ্যাসের চাপ পরীক্ষার (টেস্টিং) কাজ শেষে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের জন্য কারিগরি সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন। কেবল বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন সাপেক্ষে সোমবার (২৮ নভেম্বর) জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে।
বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডের ১ নম্বর কূপ থেকে ১৯৯১ সালে গ্যাস তোলা শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৬ সালে ফের উত্তোলন শুরু হলে ওই বছরের শেষ দিকে আবারও তা বন্ধ হয়ে যায়।
২০১৭ সালের শুরু থেকেই কূপটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। এরপর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন (বাপেক্স) ওই কূপে অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে গ্যাসের মজুত পায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর ওই কূপে নতুন করে পুনঃখনন কাজ (ওয়ার্ক ওভার) শুরু হয়। কূপে গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিতের পর গত ১০ নভেম্বর থেকে গ্যাসের চাপ পরীক্ষা শেষে কূপ থেকে দ্রুত জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়।
বর্তমানে কূপের ৩ হাজার ২৫৪ মিটার গভীরে ৭০ বিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুত আছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গ্যাসের চাপ পরীক্ষার পর দেখা গেছে, কূপটি দৈনিক ১০ থেকে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে সক্ষম। তবে কারিগরি বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে দৈনিক ৭০ থেকে ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এতে দৈনিক ১২৫ থেকে ১৩০ ব্যারেল কনডেন্স গ্যাসও পাওয়া যাবে।
এসজিএফএলের দায়িত্বশীলরা জানান, সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আরও কিছু কাজ চলছে। বিয়ানীবাজারের কূপ ছাড়াও গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা-৮ ও গোয়াইনঘাট-১০ নম্বর কূপ খনন এবং রশিদপুরে একটি পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের কাজ শেষে এসজিএফএলের গ্যাস উৎপাদন আরও বাড়বে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের অধীনে আরও কূপ খননের কাজ চলছে। এসব কাজ সম্পন্ন হলে ২০২৩ সালের মধ্যে আরও অনেক গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ২০২৫ সালের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ১৬৪ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৬ কোটি ৪০ লাখ ঘনফুটে দাঁড়াবে।
টিএইচ