শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

দেশের ৮০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ৮০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর কারণে দেশের প্রায়  প্রায় ৮০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিত্রাং উপকূলীয় এলাকায় আঘাত করেছে। বিদ্যুতের অবকাঠামোগুলোর ব্যাপক ক্ষতি করেছে। প্রায় ৮০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন আছেন। ট্রান্সমিশনে আঘাত হয়নি। আঘাত হয়েছে ডিস্ট্রিবিউশনে। অনেক পোল ভেঙে গেছে। গাছ পড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

এর আগে সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ভারি বর্ষণ ও ঝোড়ো বাতাসে উপকূল অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকায় গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছে। এর ফলে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় ৪৫ লাখ ২৫ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। ঝড়ের ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিতরণ কম্পানির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)।

ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ঝড়ের কারণে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ পাঁচটি জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এসব এলাকায় প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার গ্রাহক রয়েছেন।

এদিকে, আরইবির পরিচালক (কারিগরি) মো. রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আরইবির ২৩টি সমিতির ৪৪ লাখ ১ হাজার ৫০০ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাযগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছু এলাকায় সরবরাহ বন্ধ থাকায় সোমবার বিদ্যুতের চাহিদা খুবই কম ছিল। ফলে বিদ্যুতের উৎপাদন ও সরবরাহে কোনো ঘাটতি ছিল না।

সোমবার বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ৮ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। আগের দিন (রোববার) বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট।

প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ অতিক্রম করতে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় লাগবে। মঙ্গলবার ভোর নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং উপকূলীয় অঞ্চলের ১৩টি জেলায় মারাত্মকভাবে আঘাত হানবে। আর দুটি জেলায় হালকাভাবে আঘাত হানবে। ১৩টি জেলার মধ্যে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী। অর্থাৎ চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় এটি আঘাত হানবে এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের দ্বীপ অঞ্চলগুলোতেও, বিশেষ করে মহেশখালী, সন্দীপ এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ আছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে আজ সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সিভিয়ার সাইক্লোনে রূপান্তরিত হয়েছে। এটা মহাবিপৎসংকেত পর্যন্ত যেতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষতি মোকাবেলায় সাত হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে ২৫ লাখ মানুষের আশ্রয়ণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।  

ইএফ