- প্রকাশনী থাকছে ৫৪১ টি।
- প্যাভিলিয়ন ৩৪ টি।
- মোট চারটি চত্বরে ভাগ থাকবে এ বছরের বইমেলা।
- বাড়তে পারে আরো নতুন প্রকাশনী।
`পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ` থিমকে সামনে রেখে অনেকটাই নতুনরূপে প্রস্তুত হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা-২০২৩।
বাংলা একাডেমির আয়োজনে অনুষ্ঠিতব্য বইমেলা আগামী ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে। লেখক-পাঠকের মিলন মেলার এ শুভক্ষণটির জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন আয়োজক ও বিভিন্ন প্রকাশনী স্টলের নতুন-নতুন বইয়ের পৃষ্ঠা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বইমেলার প্রস্তুতিমূলক কাজ পুরোদমে চলছে। মাটি খুঁড়ে বাঁশের বেস্টনি দিয়ে স্টল বানানোর কাজ করছেন নিয়োজিত কর্মীরা।
স্টলের জন্য ঠিকাদারি নেওয়া সেখানকার ইদ্রীসুর রহমান বলেন, বিভিন্ন প্রকাশনীর মালিকরা আমাদেরকে অর্ডার করলে আমরা স্টল বানিয়ে দিচ্ছি। একটা স্টলের দাম ১০ হাজার থেকে শুরু করে ১২ হাজার পর্যন্ত মান অনুযায়ী হয়ে থাকে।
অমর একুশে বইমেলার প্রস্তুতি এবছর কিভাবে, কতদূর জানতে বাংলা একাডেমির পরিচালক ও বইমেলা সদস্য সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম আমার সংবাদকে বিস্তারিত জানান।
এ বছর বইমেলায় পুরাতন এবং নতুন মিলে এখনো পর্যন্ত কতটা প্রকাশনী অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে প্রশ্নের জবাবে, বাংলা একাডেমির পরিচালক ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, যারা পুরোনো ছিলো তারা সবাই অংশগ্রহণ করতে পারে এমনিতেই। পুরোনো কোনো প্রকাশনী বাদ গেছে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন যদি গিয়ে থাকে তাহলে ২/১ টা আর এটা আমরা দেখিনা।
তবে পুরোনো ১৩ টা প্রকাশনী আবেদন করেনি কিন্তু যারা করেছে তারা অবশ্যই থাকছে অমর একুশে বইমেলায়।
এখন পর্যন্ত নিশ্চিত তথ্যের ভিত্তিতে পুরোনো সাধারণ প্রকাশনী প্রতিষ্ঠান ৩৩৮ টি যেটা শুধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। শিশু প্রকাশনা ৬৮ টি, সর্বমোট ৪০৬ টি পুরোনো প্রতিষ্ঠান অংশ নিবে।
তবে, এ বছর আমরা নতুন-পুরাতন ভাগ করিনি। এর মাঝে (৪০৬) শিশুতে ২টি এবং সাধারণে ১০টি আমরা একসংগে করেছি। নতুন কতগুলো প্রকাশনী আবেদন করেছিলো জানতে চাইলে বাংলা একাডেমি পরিচালক বলেন, ৮০-৯০ টি আবেদন করেছে তার মধ্যে ১২ জনকে দেওয়া হয়েছে বাকিরা পায়নি।
কারণ আমাদের জায়গা সংকট এজন্য বাকিদের দিতে পারিনি এখন যদি জায়গা বেশি হয় অবশ্যই দ্বিতীয় লিস্টে তাদেরকে দেওয়ার চেষ্টা করবো পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী।
এবছর বইমেলায় নিরাপত্তামূলক কী রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আজকে আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং হয়েছে এ ব্যপারে। সব ধরনের নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এসেছিলেন। তারা বলেছেন যে অবশ্যই নিরাপত্তার সকল ব্যবস্হা তারা নিবেন। এ ব্যাপারে কোনো ঘাটতি নেই।
বাংলা একাডেমির ভিতরে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সর্বমোট স্টলের সংখ্যা এখনো পর্যন্ত (৪০৬) সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং বাংলা একাডেমিতে (১০৩) কিন্তু এখানে বাড়বে কারণ সরকারি প্রতিষ্ঠান আসলে দিয়ে দেওয়া হয়। সর্বমোট ৫৪১ টি। এবং প্যাভিলিয়ন সংখ্যা ৩৪ টি।
প্রায় ১১ লক্ষ ৫০ হাজার বর্গফিট জায়গা জুড়ে মিলবে এ বছরের বইমেলা। যা আগের তুলনায় একটু বেশি। (মন্দিরের ডান পাশের জায়গাটা নতুন করে যোগ হয়েছে )।
সচিবের নির্দেশনা ছিলো বাংলা একাডেমির নিজস্ব পরিচালনায় করার জন্য তাই এবার চার-পাঁচ মাস আগে থেকেই শুরু হয় অমর একুশে বইমেলার আয়োজন। সম্পূর্ণ নিজস্ব আর্কিটেক্ট, ডিজাইনার দিয়ে করা হচ্ছে এ বছরের আয়োজন।
অন্য বছরের তুলনায় এবারের আয়োজনের ভিন্নতার মধ্যে থাকছে, খাবারের দোকানগুলো একবারে আলাদা জায়গায় এবং পুরো জোনের মাধ্যমে ভাগ করা। চারটি চত্বরে ভাগ করা হয়েছে নতুন করে। সেগুলো হচ্ছে।
১.বঙ্গবন্ধু চত্বর।
২.বঙ্গমাতা চত্বর।
৩.শেখ রাসেল শিশু চত্বর।
৪.এবং বাংলা একাডেমির অংশের টা হচ্ছে চিত্তরঞ্জন সাহা চত্বর।
এ বছরের বইমেলায় কাঠামো এমনভাবে দাড় করানো হয়েছে যে একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সরাসরি দেখা যাবে এবং অবস্থান গত পরিবর্তনের মধ্যে মেট্রোরেলের কারণে মূল গেইটটা পরিবর্তন হয়ে গেছে।
বই মেলায় প্রবেশ এবং বাহিরের রাস্তা থাকবে মোট ৪ টি। (১.ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট ২.টিএসসি ৩.উল্টো পাশে মন্দির গেট ৪.দোয়েল চত্বর)।
এবছর বইমেলায় গাড়ি পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা থাকবে কি না? জানতে চাইলে এ একাডেমি পরিচালক বলেন, এখনো পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়নি তবে আজকে একটা কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। (যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মহোদয় রয়েছেন) তবে চেষ্টা করা হচ্ছে আসলে জায়গাতো নেই, কারণ মেট্রোরেলের কারণে অনেক জায়গা পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।
সম্পূর্ণ কাজ কবে শেষ হবে সে সম্পর্কে একাডেমি পরিচালক বলেন, আমরা আশা করি সামনের রোববার (২২) জানুয়ারি দেওয়ার চেষ্টা করবো এবং সম্পূর্ণ রুপে মেলার কার্যক্রম ২৯/৩০ তারিখের ভিতরে শেষ হয়ে যাবে। কারণ এবছর খুব সম্ভবত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুরো মেলা পরিদর্শন করবেন সরাসরি।
টিএইচ