শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post
উদ্বোধনের ৯০ দিন

পদ্মা সেতুতে প্রায় ২০০ কোটি টাকার টোল আদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

পদ্মা সেতুতে প্রায় ২০০ কোটি টাকার টোল আদায়

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরদিন ২৬ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। চালুর প্রথম ৯০ দিনে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৯১৪টি যানবাহন চলাচলে টোল আদায় হয়েছে ১৯৫ কোটি ৪১ লাখ ৬২ হাজার ৩৫০ টাকা।

প্রতিদিন গড়ে টোল আদায় হয়েছে দুই কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৯১৫ টাকা। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ওয়েব পোর্টাল থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

পদ্মা সেতুতে আধুনিক পিটিজেড কন্ট্রোল ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। চলতি বছরের মধ্যে সেতুটি পুরোপুরি অ্যাডভান্স ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় আসবে। এ ছাড়া সেতুতে রোবটিক ক্যামেরা স্থাপনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, পদ্মা সেতুতে রেল চালু হলে এই খাত থেকে আসবে বাৎসরিক টোল। এ ছাড়া গ্যাস, বিদ্যুৎ ও ব্রডব্যান্ড লাইন থেকে মিলবে টোল। প্রকল্পের মেয়াদ শেষে প্রতিবছর সরকারের অর্থ বিভাগকে সেতু কর্তৃপক্ষের ঋণের কিস্তি পরিশোধ করার কথা রয়েছে প্রায় ৮২৬ কোটি টাকা। 

পদ্মা সেতুর ব্যবস্থাপনায় চলছে আধুনিকায়ন। এরই মধ্যে পিটিজেড, ডোম, বুলেট ও ফিসআই—এই চার ধরনের ৩৪টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে সেতুর দুই প্রান্তের টোল প্লাজায়। এ ছাড়া সেতুতে রোবটিক ক্যামেরা স্থাপনের প্রক্রিয়া এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। এই ক্যামেরা স্থাপিত হলে সেতুর ওপর নজরদারি আরো সহজ হবে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ) সহকারী প্রকৌশলী রঞ্জন চন্দ বিশ্বাস জানান, সব দিকে ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত সমানভাবে ঘুরে হাই রেজল্যুশন ভিডিও গ্রহণে সক্ষম পিটিজেড কন্ট্রোল ক্যামেরা পদ্মা সেতুর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ভালো ভূমিকা রাখছে।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় ধরা আছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে জাপান সরকারের ঋণ মওকুফ ফান্ডের অর্থ ৩০০ কোটি টাকা। যা আর পরিশোধ করতে হবে না। 

ফলে সেতু বিভাগকে আসল হিসেবে ২৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ফেরত দিতে হবে। এর সঙ্গে বাড়তি ১ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। অর্থাৎ সুদ-আসলে ৩৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে ৩৬ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিতে টোলের টাকা ব্যয়ের বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সেতুর সাধারণ রক্ষণাবেক্ষণে টোল আয়ের সাড়ে ৭ শতাংশ ব্যয় হবে। এর মধ্যে টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের খরচও আছে। রয়েছে ভ্যাট।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ ফেরদাউস জানান, ১০০ বছরেরও বেশি টেকসই হবে সেতু। তবে প্রতি ১০ বছর অন্তর অন্তর সেতু সংস্কারের বিষয়টিও রয়েছে। তিনি জানান, ধীরে ধীরে সেতু লাভজনক হয়ে উঠবে। 

আর ঋণ পরিশোধের পর মুনাফাও অনেকগুণ বেড়ে যাবে। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, ৩৫ বছর পরে এই সেতুতে যানবাহনের সংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমনি টোলের হারও বাড়বে। তাই ভ্যাট ও আয়কর এবং সংস্কার ছাড়া আর কোনো ব্যয় থাকবে না।

পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি আলমগীর হোসাইন বলেন, সেতুতে এ পর্যন্ত কয়েকটি দুর্ঘটনা ভাবিয়ে তুললেও এখন তা নিয়ন্ত্রণে চলছে পরিকল্পনা। পদ্মা সেতু চালুর প্রথম তিন মাসেই যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে।

টিএইচ