আমার বিশ্বাস, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু-কিশোরদের সম্ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে সঠিক পরিচর্যা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে মানবিক পরিবেশে গড়ে তোলা হলে তারাও পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পদ হিসেবে গড়ে উঠবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ‘১৭তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে সবার সঙ্গে অটিজম ও প্রতিবন্ধিতার শিকার ব্যক্তিদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে। এ লক্ষ্যে আরও বেশি প্রযুক্তিবান্ধব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে তিনি নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী (এনডিডি) সুরক্ষা ট্রাস্টকে আহ্বান জানান।
অটিজম ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করা ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস-২০২৪’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বেরসব অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু, ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্য, পরিচর্যাকারী, অটিজম বিষয়ক গবেষক, শিক্ষক, চিকিৎসক, থেরাপিস্ট, সহায়ক উপকরণ উদ্ভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনগুলোকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
আওয়ামী লীগ সরকার অটিজম ও প্রতিবন্ধীবান্ধব সরকার জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত ১৫ বছরে আমরা অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিসহ সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কল্যাণে ব্যাপক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছি। এর মধ্যে রয়েছে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন-২০১৩, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩, নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী (এনডিডি) সুরক্ষা ট্রাস্ট বিধিমালা-২০১৫, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা বিধিমালা- ২০১৫, বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন-২০১৮ এবং প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা-২০১৯। আমাদের সরকার এসব আইনের সফল বাস্তবায়নে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ‘কাউকে পিছনে রেখে উন্নয়ন নয়’-এ নীতির আলোকে আমরা সমাজের সবার জন্য উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, এনডিডি সুরক্ষা ট্রাস্টের আওতায় চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) দেশের ১৪টি স্থানে প্রকল্প হিসেবে ১৪টি ‘অটিজম ও এনডিডি সেবা কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও এনডিডি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তিদের জন্য দেশের আটটি বিভাগে আটটি ‘চিকিৎসা, শিক্ষা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এনডিডি ব্যক্তির স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সাধারণ বিমা করপোরেশনের সঙ্গে ট্রাস্ট যৌথভাবে ‘বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বীমা’ বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, আমাদের সরকার এনডিডি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষায় ‘জাতীয় কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা ২০১৬-২০৩০’ প্রণয়ন করেছে। এ কর্মপরিকল্পনার আলোকে এনডিডি সুরক্ষা ট্রাস্ট অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তির গৃহভিত্তিক পরিচর্যা ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার জন্য মাতা-পিতা ও অভিভাবকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করেছে।
একইসঙ্গে শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। এনডিডি সুরক্ষা ট্রাস্ট অমৌখিক যোগাযোগের জন্য ‘বলতে চাই’ এবং অটিজম বিষয়ক প্রাথমিক স্ক্রিনিং বা শনাক্তকরণের জন্য ‘স্মার্ট অটিজম বার্তা’ নামক দুটি অ্যাপস তৈরি করেছে।
টিএইচ