উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পাবনার বেড়া উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রতিদিনই নতুন করে বিভিন্ন গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট ও নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়ছে। এতে করে নিচু এলাকার বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে বলে চরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানিয়েছেন।
যমুনার পানি অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলসহ নদী পাড়ের এলাকার মানুষ ভাঙন ও বন্যা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পার করছে। এদিকে নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে আবারো নতুন করে উপজেলার হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড চর নাগদাহ গ্রামে ফের যমুনা নদীর ভাঙন ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে।
উক্ত গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদ মোল্লা বলেন, গত সাতদিনে এ এলাকায় যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে কমপক্ষে ৩শ বিঘা ফসলি ও আবাদি জমি, ১৩ টি বসত বাড়িসহ অসংখ্য গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ওই এলাকার কৃষক মোহাম্মদ আলি বলেন, আমি খেটে খাওয়া প্রান্তিক কৃষক মাঠে দুই বিঘা জমি ছিল, তাতে চাষাবাদ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে সারা বছর কোনো রকমে চলে যেত।
কিন্তু গত চারদিন আগে জমিসহ বসত ভিটা সর্বনাশা যমুনা নদী কেড়ে নিয়েছে, নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া জমির মধ্যে অধিকাংশ জমিতে বর্ষালি ইরি, আমনধান ও বিভিন্ন সবজি ফসল ছিল বলে স্থানীয়রা এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙনে বসতভিটা ও জমি-জমা হারিয়ে এসব মানুষ খোলা আকাশের নিচে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে এবং ভবিষ্যৎ চিন্তায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
নদী ভাঙনে ফসলের ক্ষতি ও ফসলিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া বিষয়ে বেড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত কবির বলেন, নদীর ভাঙনে চর নাগদাহ মৌজায় বসত বাড়িসহ ৩০ হেক্টর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এ সব জমিতে, বোনা আমন ৭ হেক্টর, পটল ২ হেক্টর, ঘাস ১ হেক্টর, রোপা আমন ১ হেক্টর , বসত বাড়িতে সবজি ফসল ১ হেক্টরসহ প্রায় ৯০ বিঘা জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরো জানান, এখনো যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি ও চর নাগদাহ গ্রামে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
টিএইচ