বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ শুরু

আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ শুরু হচ্ছে আজ। এ উপলক্ষে ‘নারী ও কন্যা নির্যাতন বন্ধ করি, নতুন সমাজ নির্মাণ করি’ স্লোগানে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ড. ফৌজিয়া মোসলেম, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহফুজা রেহানা বেগম ও সীমা মোসলেম, লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারপারসন খন্দকার ফারজানা রহমান সংবাদ সম্মেলনে ‘নারী ও কন্যার প্রতি যৌন সহিংসতা (ধর্ষণ) ও তরুণ প্রজন্মের সম্পৃক্ততা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদনে নারীর প্রতি যৌন সহিংসতার ঘটনায় তরুণদের সম্পৃক্ততা বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ৩৮৪ জন উত্তরদাতার মধ্যে ৮২.৩ শতাংশ তরুণ মনে করে যে, যুব জনগোষ্ঠীর যৌন সহিংসতার শিকার হওয়ার প্রবণতা বেশি এবং ৫৯.৪ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন যুব জনগোষ্ঠী যৌন সহিংসতার অপরাধী হওয়ার প্রবণতা বেশি।

আইন ও শালিস কেন্দ্রের হিসাবে, ২০১৯ সালে ৪২৩টি পারিবারিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫৪টি। ২০১৯ সালে নির্যাতনে মৃত্যু ৩৬৭ জনের, আর আত্মহত্যা করেন ৯০ জন নারী। ২০২০ সালে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয় ৮৯ জনকে। আত্মহত্যা করেন ১৮ জন। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১৭৫ জন নারীকে তাদের স্বামী হত্যা করেন।  ৯২টি মামলা হয়।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মালেকা বানু বলেন, এখনো মানুষ পারিবারিক সহিংসতাকে ব্যক্তিগত বিষয় বলে মনে করে। সমাজ ও নারীও তা মেনে নেয়। নির্যাতনের প্রতিকারের জন্য আইনি সাহায্য নেন না। কোভিডের পরে যৌতুকের ঘটনাও বেড়েছে। মহিলা পরিষদের তথ্যমতে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হন ২ হাজার ৩৬ জন নারী। যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হন ৯২ জন। যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয় ৪২ জন নারীকে।

১৯৮১ সাল থেকে বিভিন্ন দেশের নারী অধিকার কর্মীরা ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালন করে আসছে। ১৯৯৩ সালে ভিয়েনা মানবাধিকার সম্মেলনে এ দিবসটিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ নারী নির্যাতন দূরীকরণ বিষয়ক ঘোষণা গ্রহণ করে এবং ২০০০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ২৫ নভেম্বরকে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

পরে ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত ১৬ দিনের প্রচারণা কর্মসূচির উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রতিবছর বিশ্বের দেশে দেশে সরকারি, বেসরকারি উদ্যোগে নারী নির্যাতন দূরীকরণ দিবস পালনসহ ১৬ দিনের প্রচারণায় নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

টিএইচ