দায়িত্ব পালনের সব স্তরে নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বঙ্গভবনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে আপনারা জনগণের সেবক, প্রভু নন।
বুধবার (৩ মে) দুপুরে দরবার হলে বঙ্গভবনের সব সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এই নির্দেশনা দেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দায়িত্ব পালনের সব স্তরে নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বঙ্গভবনের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখার পাশাপাশি কীভাবে আরও বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে ভাবতে হবে।
তিনি বলেন, আপনাদের (বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারী) সব কর্মকাণ্ড এমন হতে হবে যাতে জনগণ আপনাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সততা ও ন্যায়ভিত্তিক, জ্ঞাননির্ভর ও আলোকিত জনপ্রশাসনের কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, আপনারা সরকারের আইন, বিধি-বিধান ও জনস্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হবেন। মনে রাখবেন সব আইন প্রণীত হয় জনগণের কল্যাণের জন্য।
বঙ্গভবনকে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর সঙ্গে মিশে রয়েছে বঙ্গভবনে কর্মরত সব কর্মচারীর মেধা, শ্রম ও আন্তরিকতা। বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হলেও একজন নাগরিক হিসেবে সরকারি কাজের পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে সার্বক্ষণিক প্রয়াস চালাবেন বলেও রাষ্ট্রপতি প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাস্তবায়নের পথে। বাংলাদেশ এরই মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হয়েছে।
দেশের চলমান উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে নিয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সক্রিয় ভূমিকা রাখারও তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, জনগণ যাতে তাদের প্রত্যাশিত সেবা সহজে ও নির্বিঘ্নে পেতে পারে সেদিকে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খেয়াল রাখতে হবে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গভবনের ইতিহাস শুধুই যে অহংকার আর গর্বের তা নয়, খুনি চক্র এই বঙ্গভবনে বসেই বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি বলেন, কিছু দেশদ্রোহী তাদের সহায়তাও করেছে। ইতিহাস তাদের ক্ষমা করেনি। তারা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। ঘাতকচক্র ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তারা বাংলার মাটি ও মানুষের কাছ থেকে তার নীতি ও আদর্শ মুছে ফেলবে, কিন্তু তারা তা পারেনি। বঙ্গবন্ধু আজ শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের প্রেরণার উৎস।
রাষ্ট্রপতি বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট শাহাদাতবরণকারী বঙ্গবন্ধু পরিবারের সব শহিদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় চার নেতা ও জাতির ক্লান্তিলগ্নে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সব সংসদ সদস্য যাদের ভোটে তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।
টিএইচ