আমের রাজধানী খ্যাত নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চল সাপাহার উপজেলায় প্রচন্ড তাপদাহ ও খরার কারণে মাটিতে ঝরে পড়ছে কৃষকের স্বপ্নের আম। তীব্র খরা আর টানা বৃষ্টিহীনতায় শুকিয়ে গেছে পুকুর খাল ও ডোবাগুলো।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা পুকুর খাল ও ডোবাগুলো দীর্ঘদিন খনন ও সংস্কার না করায় প্রচন্ড রোদ ও খরোতাপে পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। সেই সাথে দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় এবং প্রচন্ড তাপদাহে ঝরে পড়েছে গাছের আম।
যার ফলে অন্য বছরের চেয়ে এবছর উপজেলায় আমের ফলন বিপর্যয় ঘটতে চলেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট আমচাষীরা। গত কয়েকদিন আগেও এলাকার বিভিন্ন আম গাছগুলোতে থোকায় থোকায় আমের গুটি দেখা গেলেও এখন তার অনেকটাই ঝরে পড়তে দেখা গেছে। সেই গাছগুলোতেই এখন আর থোকায় থোকায় দেখা যাচ্ছে না আমের গুটি।
প্রচন্ড রোদ ও তাপদাহে আমের গুটিগুলো ঝরে পড়ায় আমবিহীন ডাটা দেখা গেছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার শুরুতে আমের মুকুল বেশি থাকলেও পরবর্তীতে তাপমাত্রা ও খরার কারণে ঝরে পড়েছে বাগানের অধিকাংশ আম। আম প্রধান এই অঞ্চলে চাষীরা বর্তমানে গাছের দিকে তাকিয়ে হতাশার পাশাপাশি বুক ফাটা আর্তনাদ করছেন এবং বলছেন এবছর সব চাইতে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন তারা।
এলাকার অনেক আম বাগানীরা জানান প্রচন্ড খরোতাপে গাছে গাছে পানি ও ওষুধ স্প্রে করে গাছের আম রক্ষার চেষ্টা করেও গাছে আম আটকাতে পারছেন না। প্রচন্ড খরোতাপ ও রোদে ঝরে পড়েছে বেশিরভাগ গাছের আমের গুটি। তাছাড়া সেচের জন্য পানি না থাকায় বাগানে সেচ দেয়া যাচ্ছেনা।
সাপাহার উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত কিছুদিন ধরে প্রচন্ড রোদ ও খরার কারণে গাছের আম ঝরে পড়া থেকে রক্ষার জন্য বাগানীদের গাছের গোড়ায় পানি গাছের পাতায় পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে বিভিন্ন জায়গায় পানির সু ব্যবস্থা না থাকায় আমের ফলনের লক্ষমাত্রা পুরণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বৃষ্টি হলে অনেকাংশে ক্ষতি কম হবে।
উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ অফিসার মনিরুজ্জামান টকি জানান, আমাদের পক্ষ থেকে আম রক্ষার্থে ১৫ দিন পরপর বাগান মালিক ও চাষিদের আমের গাছে বেশি করে পানি দিতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে এবং ছত্রাকনাশক ও বোরন স্প্রে করতে বলা হচ্ছে।
সাপাহার বাজার আম বাগান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন বর্তমানে কিছুকিছু বাগানে সেচ দিতে পারায় সে বাগানগুলিতে আমের গুটি ভালো পরিমানে রয়েছে। খরার পাশাপশি প্রাকৃতিক কোন বড় ধরণের দূর্যোগ না হলে আমের বাম্পার ফলন না হলেও চাষীরা তাদের খরচ পুশিয়ে নিতে পারবে বলে কৃষিদপ্তর ও আমচাষীরা মনে করছেন।
টিএইচ