এবার তিন বাঘের দেখা পেলেন পর্যটক ও বনরক্ষীরা। তিনমাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে বনে প্রথম প্রবেশ করেই বাঘের দেখা পেয়ে উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা। সাঁতরে নদী পার হওয়ার বিরল দৃশ্য মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন পর্যটক ও বনরক্ষীরা।
বনবিভাগ জানায়, গত রোববার ‘এমভি ক্রাউন’ নামে পর্যটকবাহী জাহাজ পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলার রেঞ্জের কটকা টাওয়ারের খালে প্রবেশ করলে একটি বাঘ সাঁতরে নদী পার হতে দেখেনে পর্যটকরা। আগেরদিন শনিবার ‘এমভি বন সাম্পা’ নামে অপর একটি পর্যটকবাহী জাহাজের পর্যটকরা কচিখালী নদীতে আরো একটি বাঘরে সাঁতরে যাওয়ার বিরল দৃশ্য অবলোকন করেন।
এছাড়া, ১ সেপ্টেম্বর বনরক্ষীরা নিয়মিত টহলকালে শরণখোলা রেঞ্জ অফিস এবং আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রের মধ্যবর্তী এলাকার বনে আরো একটি বাঘের দেখা পান। পৃথক তিনটি স্থানে দেখা বাঘের এই দৃশ্য মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন পর্যটক ও বনরক্ষীরা। এনিয়ে চলতি বছরে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের বিভিন্ন স্থানে চতুর্থ বারেরমতো মিলেছে বাঘের দেখা।
এর আগে এর আগে গত ৮ আগস্ট সকালে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী অভয়ারণ্য কেন্দ্রের অফিসের সামনে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখতে পান বনরক্ষীরা। বিশাল রয়েল বেঙ্গল টাইগারটি বনরক্ষীদের ব্যারাকের খুব কাছে চলে আসে। এসময় মোবাইলে বাঘটির ভিডিও ধারণ করেন এক বনরক্ষী।
এছাড়া, গত ৩ ফেব্রুয়ারি পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়ি অফিসের পুকুর পাড়ে দেখা মেলে জোড়া বাঘের। একদিন-একরাত (প্রায় ২২ ঘণ্টা) সেখানে অবস্থান করে বাঘ দুটি আবার বনে ফিরে যায়। ২৪ ফেব্রুয়ারি কটকা এলাকায় তিনটি বাঘ দেখতে পান বনরক্ষীরা।
বন সাম্পান জাহাজে পর্যটক হিসেবে ছিলেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রধান ড. মনিরুল ইসলাম। তার বরাদ দিয়ে শাহ জামাল পপলু জানান, তারা যে বাঘটি দেখতে পান সেটি ছিল একটি বাঘিনী।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহবুব হাসান বলেন, তিন মাস বন্ধ থাকায় সুন্দরবনের জীববৈচিত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। কোলাহলমুক্ত থাকায় বাঘসহ বন্যপ্রাণিরা নির্বিঘ্নে চলাচলের সুযোগ পেয়েছে। যার প্রমাণ হিসেবে প্রথমবার বনে প্রবেশ করেই বাঘের দেখা পাওয়া সম্ভব হয়েছে। পর্যটকবাহী জাহাজ এম ভি ক্রাউন ও বন সাম্পানের পর্যটক এবং বনরক্ষীরা পৃথক পৃথক স্থানে তিনটি বাঘ দেখেছেন।
এসিএফ মাহবুব হাসান আরো বলেন, বন বিভাগের কঠোর নজরদারীতে বন অপরাধ কমে যাওয়ায় বাঘ, হরিণের সংখ্যা বেড়েছে। ভবিষ্যতে পর্যটকরা সুন্দরবনে অহরহ বাঘের দেখা পাবে বলে আশা করি।
টিএইচ