তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের সরকারের অভিযানে যখন জঙ্গিসন্ত্রাসীরা গ্রেপ্তার হচ্ছিল তখন বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়া বলেছিলেন- কিছু মানুষকে ধরে আটক করে রেখে তাদের চুল-দাড়ি লম্বা হলে জঙ্গি আখ্যা দেয়া হয়, আসলে জঙ্গি নেই। সুতরাং এই দেশে জঙ্গি আশ্রয়দাতা, প্রশ্রয়দাতা, অর্থদাতা হচ্ছে বিএনপি এবং বিএনপি নেতারা। সেই জঙ্গিরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।’
সোমবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ‘ফখরুল-তারেক গংদের দেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আদালত থেকে আসামী ছিনতাই করা হয়েছে, চট্টগ্রামে পুলিশ বক্সের ওপর হামলা চালানো হয়েছে, কাঁচপুর ব্রিজের নামফলক পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ তারা আবার জ্বালাও-পোড়াও, নৈরাজ্য শুরু করেছে। তাদের মদদে এবং পৃষ্ঠপোষকতায় জঙ্গিগোষ্ঠী, সন্ত্রাসীবাহিনী, মৌলবাদীরা আবার ডালপালা মেলেছে। সুতরাং এই জঙ্গিগোষ্ঠীর আস্ফালন আর বিএনপির নেতৃত্বে সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা একসূত্রে গাঁথা।’
ড. হাছান বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব কিছুদিন আগে ঠাকুরগাঁওয়ে তার পৈত্রিক বাড়িতে বসে বলেছেন পাকিস্তানই ভালো ছিলো। কারণ মির্জা ফখরুল সাহেবের বাবা পাকিস্তানপন্থী ছিলেন বিধায় দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বেশ কিছু দিন আত্মগোপনেও ছিলেন। একইসাথে মির্জা ফখরুল সাহেবও কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন বলে আমি শুনেছি। তিনি আবার ঘোষণা করেছেন যে, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আরেকটি যুদ্ধ করে আবার দেশকে স্বাধীন করবেন। অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ যে স্বাধীন হলো সেটি তাদের পছন্দ হয় নাই। সে জন্য আবার একটি যুদ্ধ করে দেশটাকে তারা পাকিস্তান বানাতে চায়। এর প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আজকে যে মানববন্ধন আয়োজন করেছেন আমি মনে করি এটি একটি যথার্থ আয়োজন।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘ছোটবেলায় বর্গীদের কিচ্ছা শুনে যেমন পিলে চমকে উঠতো এখন তারেক জিয়াও সে রকম একটি নাম। তারেক জিয়ার নাম শুনলে মানুষের মনে পড়ে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, তার নেতৃত্বে দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়া, হাওয়া ভবন-খোয়াব ভবনের কথা, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের কথা। এই দুর্নীতি, সন্ত্রাস-নৈরাজ্য এবং অপশাসনের প্রতীক তারেক রহমান তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। । তাকে নিয়ে না কি তারা যুদ্ধ করবেন। সুতরাং এই অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকায় এসে না কি ঢাকা দখল করবে। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবসে পাকিস্তানিরা এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণ করেছিল। আর ১০ ডিসেম্বর এই পাকিস্তানপন্থী বিএনপি নেতারা যখন ঢাকা শহরে আসবে তাদের মানুষ আত্মসমর্পণ করাবে। তারা সারা বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে এখানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাবে সেটি বাংলাদেশের মানুষ, ঢাকা শহরের মানুষ হতে দেবে না। যেভাবে ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের শিল্পী সমাজ, সাংস্কৃতিককর্মীরা, মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল, স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রভাগে ছিলো আজকেও তাদের আহ্বান জানাই এই অপশক্তিকে রুখে দেওয়ার জন্য।’
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের কন্ঠশিল্পী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের কন্ঠশিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, চিত্রনায়িকা অরুনা বিশ্বাস, চিত্রনায়ক শাকিল খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অভিনেত্রী তারিন জাহান, তানভীন সুইটি, সঞ্জিতা চৌধুরী, সিআইপি ইঞ্জি. আবু নোমান হালদার, সাংবাদিক সুজন হালদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক লায়ন মুহাম্মদ মীযানুর রহমান, আশরাফুজ্জামান মিতু মাতবর, সঙ্গীতশিল্পী লিসা কামাল, অভিনেতা রাজ সরকার, অভিনেত্রী পারুল আক্তার রুপা, সনিয়া পারভীন শাপলা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রব্বানী প্রমুখ।
ইএফ