নির্বাচন কমিশনের (ইসি)আরও দুই লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প ‘জাতির সঙ্গে মশকরা’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা দেখেন যে, কী রকম মস্করা হচ্ছে জাতির সঙ্গে। যেখানে মানুষ নির্বাচন চাচ্ছে একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, যেখানে নির্বাচন কমিশনকে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল বলেছে যে, আমরা ইভিএম চাই না, প্রায় সবগুলো, একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া।
সেখানে তারা ( ইসি) আজকে ১৫০ আসনের জন্য আরও ইভিএম মেশিন কিনতে ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকা চেয়েছে। এ যেন মগের মল্লুক। কারণ এদেশে তো কোনো জবাবদিহি করতে হয় না।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইসি বৈঠকে আরও ২ লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার জন্য ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। সরকারের অনুমোদনের জন্য এই প্রকল্প এখন পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে ইসি।
মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকদিন আগে মন্ত্রিপরিষদ সচিব পরিকল্পনা কমিশনের বৈঠকে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, এখানে যেসব প্রকল্প তৈরি হয় তার বেশির ভাগ করা হয় চুরির জন্য এবং দেখা যায় যে বাস্তবতার সঙ্গে বিশাল ফারাক। এখানে কোনো পর্যালোচনা পর্যন্ত করা হয় না। এখানে মধ্যরাতে ঋণ চুক্তি করা হয়। এই হচ্ছে সার্বিক অবস্থা।
তিনি বলেন, ‘দেয়ার ইজ নো গর্ভানেন্স’। দেশকে এরকম একটা ভয়াবহ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে এই আওয়ামী লীগ; যেটা আমরা জীবনে কোনো দিন …।
নজরুল ভাই বসে আছেন, আমরা বসে আছি, এই দেশটার স্বাধীনতার সংগ্রামের সঙ্গে আমাদের একটা সম্পর্ক আছে। আমরা কোনোদিন কল্পনাও করিনি, চিন্তাও করিনি যে, এই দেশ আমাদেরকে এমন দিন দেখতে হবে।
পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের তথ্য সংগ্রহের নামে হয়রানি করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পুলিশ বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার নামে হয়রানি করছে এবং দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিকে আরো আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছে।
বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ রাজনৈতিক কর্মীদের একজনের কাছ থেকে অন্যজনের তথ্য সংগ্রহেও লিপ্ত রয়েছে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনসমূহের কমিটির তালিকাও তারা সংগ্রহ করছে।
তিনি বলেন, পুলিশের এই ধরনের কর্মকাণ্ড সংবিধান, ফৌজদারি কার্যবিধি, পুলিশ আইন বা পুলিশ বিধি কিংবা অন্য কোনো আইন দ্বারা কোনোভাবে সমর্থনযোগ্য নয়।
এটা একদিকে যেমন নাগরিকের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ণ করছে অন্যদিকে নাগরিকের আইনি অধিকার ভোগ করা ও তার ব্যক্তি স্বাধীনতার উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে প্রতীয়মান হয় যা সংবিধানের ৩১, ৩২ ও ৪৩ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
টিএইচ