শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

‘কিসের জাদুতে আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স বাড়ছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘কিসের জাদুতে আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স বাড়ছে’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার হঠাৎ করে বলছে আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স বাড়ছে! কি এমন যাদু তৈরী হলো যে রেমিট্যান্স বেড়েছে। এর মূল কারণ হলো, চুরি হওয়া টাকা ফেরত আনছে লুটেরারা।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন বলেন, কয়েকদিন আগে সরকার খুব লাফালাফি করে ছিল। এখন কিন্তু থেমে গেছে। এখন বলেন, আমরা সংঘাত চাই না। আলোচনা বসতে চাই।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বিগত কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করে এসেছি। এ আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছে। আমাদের দশ দফার আন্দোলনের প্রথম দফা সরকারের পদত্যাগ। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবর্তন চাই, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই।

তিনি সকলকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, মনে রাখতে হবে, তারা (সরকার) আমাদের ফাঁদে ফেলতে চাইবে। গাড়ী পুড়বে, অগ্নিসংযোগ করবে তারা, দায়ভার দিবে আমাদের।

প্রয়াত জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, তার মৃত্যু সংবাদে সারাদেশ ছিলো বাকরুদ্ধ। যে জিয়া মানুষের হৃদয়ে অবস্থান করছেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে কোনো লাভ নেই। তাকে যতই খাটো করা হোক ধ্রুবতারার মত সত্য জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক। 

দেশের কঠিন সময়ে এই জাতির সামনে ত্রাণ কর্তা হাজির হয়েছেন। যতই মিথ্যাচার করেন না কেন তাকে কারো মন থেকে মুছে ফেলা যাবে না। যেখানে ভবিষৎ নেই সেখানে তিনি আশার আলো তৈরি করেছিলেন।

তিনি বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম, সে গণতন্ত্র আজ ১৫ বছর যাবত ভূলন্ঠিত। সে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে হলে জিয়াউর রহমানকে জানতে হবে। কিভাবে তিনি একটি অন্ধকার জাতিকে আলোর পঘে পথ দেখিয়েছিলেন। কিভাবে প্রতিটি জাতীয় সংকটে ত্রাণকর্তার ভুমিকা রেখেছেন।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, ডা. এজেডএম জাহিদ, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমান রাজনীতিবিদ হিসেবে সফল, রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবেও সফল। সৈনিক হিসেবেও সফল। তিনি শুধু স্বাধীনতার ঘোষকই ছিলেন না, সেক্টর কমান্ডার হিসেবে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। 

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশে মৌলিক পরিবর্তন এনেছিলেন। ৭২ থেকে ৭৫ সালে অর্থনীতি লুটপাট হয়েছিলো। অর্থনীতিকে ভঙ্গুর করে ফেলেছিলো। সেখান থেকে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলো জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, আজকে যারা ক্ষমতায় তারা শহীদ জিয়াকে ভয় পায়। তাই তার সম্পর্কে অবান্তর কথা ছড়ানো হচ্ছে। আজকে তারা (সরকার) বলেন, জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না। মিথ্যাচার করে নতুন প্রজন্মের কাছে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। দেশকে চলমান সংকট থেকে মুক্ত করতে শহীদ জিয়ার আদর্শিত সৈনিকদেরকেই অগ্রণী ভুমিকা রাখতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপির লজ্জিত হবার কোনো ইতিহাস নেই, গৌরব করার মত ইতিহাস আছে। আমরা সামরিক শাসন জারি করি নাই, গণতন্ত্র হত্যা করিনি। এ আওয়ামী লীগ ১/১১-এর অবৈধ সরকারকে বৈধতা দিয়েছে। 

বিএনপি কর্মী হিসেবে বলতে পারি বিএনপি শুধু স্বাধীনতা ঘোষকের দল নয়, গণতন্ত্র রক্ষাকারী দল। বিএনপির শাসনামলেই জনগন গণতন্ত্রের সুফল পেয়েছিলো। জিয়াউর রহমানকে আজ শ্রদ্ধা করা উচিত। অথচ আজ তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে, মিথ্যাচার করা হচ্ছে। 

মানুষ তাকে ভুলে নাই। স্বার্থবাদীরা ভুলেছে। তিনি বলেন, আজ দেশকে শেষ করে দেয়া হচ্ছে। বিদেশিরা আজ এ সরকারের ভোট চুরির কথা জানে। গণতন্ত্র কুক্ষিগত করে রাখার কারণে সারাবিশ্বে বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু রাজনৈতিক নেতাই ছিলেন না, তিনি সৈনিকদেরও নেতা ছিলেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক ছিলেন। তবে আজকের প্রেক্ষাপটটা ভিন্ন। 

আজকে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্ব কি চিন্তা করছে তা আজ সবাই জানে। আমেরিকায় গণতন্ত্র সম্মেলনে পৃথিবীর ১০৭ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে আমন্ত্রণ জানালেও বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আমেরিকার ভিসা নীতিতো আগেই ছিলো, তবে কেনো বাংলাদেশের জন্য আলাদা ভিসা নীতি করতে হলো? কারণ, দেশের গণতন্ত্র আজ ভূলন্ঠিত তা আজ বিশ্ব অবগত।

সেলিমা রহমান তার বক্তব্যে বলেন, আওয়ামী লীগের অত্যাচারের ইতিহাস আজ নতুন নয়। এরআগেও তারা গণতন্ত্র কুক্ষিগত করে রেখেছিলো। অবাধ লুটপাটের কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিলো। রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে বাকশাল কায়েম করেছিলো। মুক্তিযুদ্ধাদের মধ্যে আজ রক্তক্ষরণ হচ্ছে। যে গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে, তা ভূলন্ঠিত করেছে এই আওয়ামী লীগ।

টিএইচ