জাতীয় পার্টির রওশনপন্থিদের জাতীয় সম্মেলন রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে শুরু হয়েছে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বর্নিল সাজে সাজানো হয়েছে পুরো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিউটসহ মৎস্যভবন এবং শাহবাগ এলাকা।
নানা রংবেরঙের পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে সম্মেলনস্থল, সড়কদ্বীপগুলোতে লাগানো হয়েছে এরশাদ শাসনামলের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন। নির্মাণ করা হয়েছে দ্বিতল বিশিষ্ট মঞ্চ। ১২ হাজারের কাউন্সিলর এবং ডেলিগেট উপস্থিতির লক্ষ্য চূড়ান্ত করে সম্পন্ন করা হয়েছে সকল আয়োজন।
প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সহধর্মিণী রওশন এরশাদের উপস্থিতিতে এতে সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা পার্টির সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দীকি, সাবেকমন্ত্রী এবং জাপার একাংশের মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামি ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এমএ মতিন, বিএলডিপি চেয়ারম্যান এম নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, বাংলাদেশ হিউম্যান পার্টির চেয়ারম্যান, চিনের সহকারী রাষ্ট্রদূত ফেং জিজিয়া প্রমুখ।
জাতীয় সংগীত ও জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দুপুর ১২ টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মৃধা। এতে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন রওশন এরশাদ অনুসারী জাতীয় পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদ।
সম্মেলনে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, অতিরিক্ত মহাসচিব সাহিদুর রহমান টেপা, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম সারোয়ার মিলন, সুনীল শুভ রায়, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, ক্বারী হাবিবুল্লাহ বেলালী, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, শাদ এরশাদ, নুরুল ইসলাম নুরু,রফিকুল হক হাফিজ, এমএ গোফরান, ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া চৌধুরী, শেখ আলমগীর হোসেন, নুরুল ইসলাম নুরু, নিগার সুলতানা রানী, এমএ কুদ্দুস খান, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, শফিকুল ইসলাম শফিক, আমানত হোসেন, ফখরুল আহসান শাহাজাদা, হাজী তুহিনুর রহমান নূরু হাজী, মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, হাজী নাসিরসহ জাতীয় পার্টির অসংখ্য কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত আছেন।
এছাড়া সারাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক কাউন্সিলর ও ডেলিকেট সম্মেলনে উপস্থিত হোন।
এদিকে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলন সম্পন্ন করতে রাজধানী রমনা এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। নেয়া হয়েছে দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বসানো হয়েছে অতিরিক্ত সিসি ক্যামেরা। শাহবাগ থেকে মৎস্যভবন পর্যন্ত মোতায়ন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। র্যাবের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সম্মেলনস্থলের আশপাশে মোতায়েন থাকবে র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স।
দলীয় একটি সূত্র জানায়, এবার কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠনতন্ত্রে আনা হচ্ছে ব্যাপক পরিবর্তন। একক নেতৃত্ব ভেঙ্গে গণতান্ত্রিকপন্থায় দল পরিচালনার জন্য ক্ষমতার ভারসাম্য থাকছে গঠনতন্ত্রে। ছোট করে আনা হচ্ছে দলীয় শীর্ষ নীতি নির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়াম। দলীয় কর্মকাণ্ডকে তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে দিতে এবং পার্টির মহাসচিবের কাজকে সহজ করতে আট বিভাগের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে পার্টির গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক পদ যুগ্ম মহাসচিব।
ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে গঠনতন্ত্রে নতুন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। কো-চেয়ারম্যান পদও কমিয়ে আনা হয়েছে। পার্টির চেয়ারম্যানকে রাজনৈতিকভাবে সহযোগিতার জন্য একজনকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত জানা যায়নি এসব পদ পদবিতে কারা আসছেন দায়িত্ব পালনে। অতি গোপনে এসব সিদ্ধান্ত ও গঠনতন্ত্র সংশোধন-সংযোজন বিষয়ক কাগজপত্র গঠনতন্ত্র উপকমিটির নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।
কাউন্সিলের সময় এসব চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কাগজপত্র হস্তান্তর করা হবে নির্বাচন কমিশন প্রধান গোলাম সরোয়ার মিলনসহ সদস্যবৃন্দের হাতে।
উল্লেখ, ২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় পার্টির নবম জাতীয় সম্মেলন।
টিএইচ