তরুণদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল আসছে আগামী বুধবার। ওইদিন জাতীয় সংসদ সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের মধ্যদিয়ে দলটির আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে।
এর আগের দিন মঙ্গলবার উপদেষ্টার পদ ছাড়বেন নাহিদ ইসলাম। জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা জানান, মার্চ থেকে রোজা। ফলে ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের দল আসছে। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ১ লাখ লোকের সমাগম ঘটাতে চান তারা। সে লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে বেশ কয়েকটি কমিটি কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে অনুষ্ঠান প্রস্তুতি কমিটি। গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র তৈরি নিয়ে পৃথক কমিটি রয়েছে। এসব কমিটি দফায় দফায় সভা করছে। সর্বশেষ গত শুক্রবারও বৈঠক হয়েছে।
এর আগে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ক্যাম্পেইন শুরু করে নাগরিক কমিটি। এতে সাড়ে ৩ লাখের বেশি মানুষ মতামত দিয়েছে। এসব মতামত যাচাই করছেন তারা।
আত্মপ্রকাশের সময় প্রায় চূড়ান্ত হলেও দলের নাম-সাংগঠনিক কাঠামো এখনও চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। শীর্ষ পদগুলো নিয়ে এখনও জাতীয় নাগরিক কমিটি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের মতবিরোধ দূর হয়নি। শুধু আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম চূড়ান্ত। সদস্য সচিব পদে আখতার হোসেনও অনেকটা নির্ধারিত বলে জানিয়েছেন ছাত্রনেতারা।
এ ছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকবেন। তবে কে কোন পদে থাকবেন, তা নিয়ে দরকষাকষি চলমান। এই বিরোধ মেটাতে সব পক্ষকে নিয়ে এখন পর্যন্ত সভা হয়নি বলে জানা গেছে। তবে নাগরিক কমিটির নেতারা একটি সমাধানে পৌঁছার চেষ্টা করছেন বলে কয়েকজন জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ইঙ্গিত করে আলী আহসান জুনায়েদ ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যে কোনো নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রাথমিক ধাপে নানাবিধ অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হয়। জাতীয় নাগরিক কমিটিতেও তা হচ্ছে। এটা খারাপ চোখে দেখার কিছু নেই। জাতীয় নাগরিক কমিটিতে বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং স্বচ্ছতার অভাব আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ ধরনের সমস্যা যেন নতুন দলে না থাকে, সেজন্য এর গঠন প্রক্রিয়া এবং নেতৃত্ব নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছি।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘নাগরিক কমিটিতে থাকা জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী গড়ে ওঠা বিভিন্ন সংগঠন থেকে আসা প্রতিনিধি, সাবেক পরিষদ, কওমি-হেফাজত অংশ, সাবেক শিবির ইত্যাদি সবাই মিলে একত্রে এই দাবি তুলেছি। দুঃখজনকভাবে বর্তমানে যেভাবে এই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব গঠন হচ্ছে, তা গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হচ্ছে না। আমি মনে করি, নাগরিক কমিটির সবাইকে সঙ্গে নিয়ে খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা উচিত।’
এ বিষয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘সংগঠনের নেতৃত্ব এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলমান। গ্রহণযোগ্যতা, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও ভিশন-মিশনে একাত্মবোধের জায়গাগুলো বিবেচনায় নিয়ে বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব নির্বাচন করব।’
টিএইচ