ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দফাভিত্তিক আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, সংস্কার নিয়ে আমরা আলোচনা চলমান রাখতে চাই, আজকে শেষ না হলে পরেও আলোচনা হবে। আমরা বোঝাতে চাই বিএনপি সংস্কারের বিষয়ে কতটা সিরিয়াস।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের বিরতিতে এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জবাব চেয়ে সরকারের পক্ষ থেকে স্প্রেডশিটে সংক্ষিপ্ত হ্যাঁ/না জবাব দেওয়ার জন্য যে কাগজগুলো দিয়েছে তাতে অনেকটা বিভ্রান্ত সৃষ্টি হয়েছে, আমাদের মিসলিড করা হয়েছে। এটা দেওয়া উচিত হয়নি।
বিএনপি সংবিধান, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত মতামত জমা দিয়েছে বলেও জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, আজকে হার্ড কপি জমা দিয়েছি। এগুলোর ওপরে বিস্তারিত আলোচনা চলছে। সংবিধান সংস্কার দিয়ে শুরু করেছি। তারপরে বিচার বিভাগ, নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা আলোচনা চলমান রাখতে চাই, আজকে শেষ না হলে পরেও আলোচনা হবে। আমরা বোঝাতে চাই বিএনপি সংস্কারের বিষয়ে কতটা সিরিয়াস।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের বিস্তারিত প্রতিবেদনে ১৩১টি প্রস্তাব থাকলেও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের স্প্রেডশিটে ৭০টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের দফাওয়ারি আলোচনা চলছে। সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে শুরু করে প্রজাতন্ত্র, রাষ্ট্রের মূলনীতিসহ সব বিষয়ে দফায় দফায় আলোচনা করব। বিস্তারিত অগ্রগতি পরে জানতে পারবেন। সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত মৌলিক প্রস্তাবের বিষয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে চেষ্টা করব এক জায়গায় আসার জন্য। বিএনপি সংবিধান সংস্কার কমিশনের ২৫টিতে একমত, ২৫টির মতো বিষয়ে আংশিকভাবে একমত। বাকি বিষয়গুলোতে একমত হতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমরা যেসব বিষয়ে বিস্তারিত মতামত দিয়েছি, সে বিষয়ে কমিশনকে যৌক্তিকভাবে বোঝাব এবং তাদের প্রস্তাবের বিষয়েও আমরা যৌক্তিকভাবে জানতে চাচ্ছি। যেটা যৌক্তিক, সেটা জাতির কল্যাণের দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা সেটা অবশ্যই বিবেচনা করব।
বিচারবিভাগের মতামত নিয়ে প্রতিবেদনে মিসলিড করা হয়েছ দাবি করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিস্তারিত প্রতিবেদনের ১৫০টি মতামতের মধ্যে ৮৯টির বিষয়ে মতামত দিয়েছি, বাকিগুলোর অধিকাংশক্ষেত্রে একমত হওয়া বা মন্তব্যসহ একমত হওয়ার কথা জানিয়েছি।
হ্যাঁ/না-তে মতামত চাওয়া বিষয়ের বিস্তারিত প্রতিবেদনে বিস্তর ফারাক আছে জানিয়ে তিনি বলেন, সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুচ্ছেদের সংশোধনী ব্যতিরেকে বিচারক নিয়োগের অধ্যাদেশ জারি করা ততক্ষণ পর্যন্ত অসাংবিধানিক হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তা সংবিধানে গৃহীত হচ্ছে। ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা সংবিধান সম্মত হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রইবে। বিচার বিভাগ কর্তৃক সংবিধান লঙ্ঘন সমুচিত হবে না।
বিএনপি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চায় জানিয়ে তিনি বলেন, প্রক্রিয়া যাতে আইনানুগ ও সাংবিধানিক পদ্ধতিতে হয়। সেজন্য মতামত বিস্তারিত দেব। লিখিতও দিয়েছি।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের অধিকাংশ সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত দাবি করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কিছু কিছু বিষয়ে তারা এমন প্রস্তাব দিয়েছে, যা বাস্তবায়ন করলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন সত্তা বজায় থাকবে না।
বিএনপির সঙ্গে কমিশনের আলোচনা দ্বিতীয় পর্যায়ের জানিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনে আরও আলোচনা হবে। কারণ আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগোচ্ছি।
টিএইচ