দেখতে দেখতে একেবারেই শেষ প্রান্তে ওয়ানডে বিশ্বকাপের এবারের আসর। ট্রফির গন্তব্য নির্ধারিত হবে আজই। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম থেকে এই ট্রফি কোথায় যাবে, তার গন্তব্য নির্ধারণ করতে আজ মাঠে নামবে ভারত-অস্ট্রেলিয়া। প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার দর্শকের সামনে প্যাট কামিন্সের চ্যালেঞ্জটাও তাই অনেক বেশি। স্নায়ুর ওপর কার জোর কতটা তারই প্রমাণ দিতে হবে আজ।
এর আগে ১২ আসরের ৫টিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দুবার ট্রফির স্বাদ পেয়েছে ভারত। ১৯৮৩ সালে কপিল দেবের নেতৃত্বে ট্রফি জিতেছিল ভারত। ২০১১ সালে দ্বিতীয়বার ভারতকে ট্রফি এনে দেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তবে আজ ষষ্ঠ শিরোপার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে প্যাট কামিন্সের দল। অন্যদিকে তৃতীয় শিরোপা জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা।
টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই অপ্রতিরোধ্য টিম ইন্ডিয়া। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত কোনো ম্যাচই হারেনি স্বাগতিকরা। অন্যদিকে প্রথম দুই ম্যাচে হেরে টুর্নামেন্ট শুরু করেছির অস্ট্রেলিয়া। পরের সবগুলো ম্যাচই জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করে তারা।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ সময় বেলা আড়াইটায় ম্যাচটি শুরু হবে। প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার দর্শক যেমন ভারতকে বাড়তি সুবিধা দেবে, তেমনি চাপে রাখবে অস্ট্রেলিয়াকেও। যদিও এতে মোটেও ভীত নন অজি দলনায়ক প্যাট কামিন্স। ভারতের এই বিপুল দর্শককে চুপ করিয়ে দিতে চান অজি দলনায়ক। গতকাল শনিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, এটা পরিষ্কার যে, দর্শক সমর্থন একপেশেই হবে। জানি, স্টেডিয়ামটা ফুলহাউস হবে। প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার দর্শক ভারতকে সমর্থন করবে। কিন্তু বিশাল দর্শককে চুপ করিয়ে দেয়ার মতো আনন্দের আর কিছু খেলায় নেই। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। ফাইনালের প্রতিটি অংশকেই আপনার মেনে নিতে হবে। এটা তো আগে থেকেই সবার জানা ছিল যে, ফাইনালের দিন অনেক মানুষের শোরগোল হবে, যা আপনাকে অভিভূতই করে দেবে।
ভারত চলতি আসরে একমাত্র অপরাজিত দল। রাউন্ড রবিন লিগে টানা ৯টি জয় তুলে নেয়ার পর সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৯৭ রানের সৌধ গড়ে জিতেছে তারা ৭০ রানে। অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটছে ভারত। ফাইনালের পথে একের পর এক দলকে গুঁড়িয়ে দিয়ে এসেছে তারা। প্রথম পাঁচ ম্যাচে রান তাড়া করে দাপটে জিতেছে রোহিত শর্মার দল। পরের পাঁচ ম্যাচে তারা জিতেছে যথাক্রমে ১০০, ৩০২, ২৪৩, ১৬০ ও ৭০ রানে! এই জয়গুলোই বলছে, ব্যাট-বলে কতটা প্রতাপ দেখিয়ে ফাইনালে উঠেছে ভারত। আর অসিরা দুটিতে হেরে যাওয়ার টানা আট ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছে। প্রতিপক্ষকে নিয়ে কামিন্স বলেন, তারা খুবই ভালো ক্রিকেট খেলে চলেছে। টুর্নামেন্টের অপরাজিত দল। কিন্তু বিশ্বাস আছে, নিজেদের সেরাটা দিয়ে তাদের কাঁপিয়ে দিতে পারি আমরা।
জস হ্যাজেলউড ও মিচেল স্টার্ক ভারতের টপ অর্ডারকে পরীক্ষার মুখে ফেলতে পারেন কি না— তার ওপর ফাইনালের ভাগ্য অনেকটাই জড়িত। এ নিয়ে কামিন্স বলেন, স্টার্ক ও জস হ্যাজেলউডের ওপেনিং পার্টনারশিপ আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তারা দুজনই বড় ম্যাচের খেলোয়াড়, বেশ কয়েকটি আইসিসি ফাইনালে খেলেছে। কাজেই নিজেদের করণীয় তারা জানে। অজিরা এখনো ‘পরিপূর্ণ ম্যাচ’ খেলতে পারেনি এবং ফাইনালের জন্যই সেরাটা জমা রেখেছে! কামিন্স সেটাই জানালেন। তার কথায়, ‘বড় কোনো জয় নেই। প্রতিটি জয়ের জন্য আমাদের লড়াই করতে হয়েছে। তবে হ্যাঁ, আমরা জয়ের একটি উপায় বের করতে পেরেছি। এটাই আমাদের আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে।
টিএইচ