মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তিন সদস্য একটি অভিযান পরিচালনা করেছেন। অভিযান শেষে দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারা এই এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছেন।
বিসিবিতে প্রায় দেড় ঘণ্টার অভিযান পরিচালনার পর সংবাদ সম্মেলনে দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন জানান, তারা তিনটি অভিযোগ পাওয়ায় এই অভিযান পরিচালনা করেছেন। এর মধ্যে দুটি অভিযোগ হলো- বিপিএলের প্রথম ১০ আসরের টিকেট বিক্রির আয়ে অসঙ্গতি। অন্যটি হলো মুজিব শতবর্ষ আয়োজনে বিসিবির অর্থ আত্মসাত।
এছাড়া দুদকের প্রধান কার্যালয়ের চিঠিতে জানানো হয়, বিসিবি’র বিভিন্ন ক্রিকেট লিগের বাছাই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযানের জন্য টিম পাঠানো হয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন পরে ২০২০-২১ সালে বিসিবির আয়োজিত মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে আয়-ব্যয়ে গড়মিল আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষের আয়োজনে আয়-ব্যয়ে অস্বাভাবিকতা আছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে রেকর্ড-পত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। যা যাচাইবাছাই করে এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে প্রতিবেদন দাখিল করবো। পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে কমিশন।’
মুজিববর্ষ আয়োজনের অসঙ্গতির প্রসঙ্গে আল-আমিন বলেন, ‘কনসার্টসহ বিসিবির সব আয়োজনে ২৫ কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। তবে আসলে খরচ হয়েছে ৭ কোটি টাকার মতো। এখানে প্রায় ১৯ কোটি টাকার কিছু একটা হয়েছে, এমন অভিযোগ পেয়েছি আমরা। টিকেট বিক্রির ২ কোটি টাকাও দেখানো হয়নি। অর্থ আত্মসাতের পরিমাণ তাই বাড়তে পারে। আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। বিসিবির অর্থ বিভাগে কাগজপত্র পেয়েছি। সব কাগজপত্র হাতে পেলে সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারবো।’
বিপিএলের টিকেট বিক্রির আয়ে অস্বাভাবিকতা সম্পর্কে দুদকের এই সহকারী পরিচালক জানান, বিসিবি একাদশ আসরে ১৩ কোটি টাকা টিকিট বিক্রি থেকে আয় করেছে। যেখানে আগের আট বছরে আয় ছিল ১৫ কোটি। এখানে অস্বাভাবিকতা আছে। বিস্তারিত যাচাই করলেই বোঝা যাবে কী অসঙ্গতি এখানে আছে।
বিসিবির তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে ২০১৪-১৫ মৌসুম থেকে ক্লাব নিবন্ধন ফি ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়। এতে টুর্নামেন্টে দলের অংশগ্রহণ কমে। গত ক’বছরে ৫টির বেশি দল তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে অংশ নেয়নি। অর্থ নিয়ে এই কারসাজির অভিযোগ পুরনো। দুদক জানিয়েছে, আগে ২-৩ বা সর্বোচ্চ ৪ দলের লিগ হতো। এখানে হয়তো কোনো কারণ আছে। কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে, বোর্ডের কোনো প্রভাব ছিল কিনা দেখা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানান, দুদককে তাদের অনুসন্ধানের বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
টিএইচ